Bismillahir Rahmanir Rahim

Logo Not Loaded

INTERNATIONAL HUMAN RIGHTS
CRIME REPORTERS FOUNDATION

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংবাদ সংস্থা, একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সংগঠন

Reg no : S-3819(608)2004

Central Office: 180/C, Hazaribagh Bazar, Phonix Leather Complex (4th Floor), Hazaribagh, Dhaka.

Mobile: 01916717622 (Director), 01671363224 (IT)
Email: crimewatchreport@gmail.com, Website: www.ihcrf.com

নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কোনো প্রশ্ন নেই;

নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কোনো প্রশ্ন নেই;

MD MAMUNUR RAHMAN, IT AFFAIRS SECRETARY, CENTRAL COMMITTEE, BANGLADESH

Date: 2024-02-24, created: 2024-02-24 23:09:53

NO IMAGE
** ইউরোপীয়রা জানত আমিই জয়ী হব ** মজুতদারদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি ** যানজট নিয়ন্ত্রণে আইজিপিকে নির্দেশ **

কাগজ প্রতিবেদক : জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেনি- জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিদেশিদের কোনো কথা নেই। এ নিয়ে কেউ কোনো কথা বলেননি। তাদের কোনো উদ্বেগ নেই, প্রশ্নও নেই। বেশির ভাগ আলোচনা হয়েছে দ্বিপক্ষীয়। তিনি বলেন, আমি সবসময় বিদেশিদের বলেছি, আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। আপনারা আসেন, আমাদের দেশে বিনিয়োগ করেন। সেই সঙ্গে নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। কাজেই যে যে বিষয়ে পারদর্শী, সেখানে সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। গতকাল শুক্রবার সকালে মিউনিখ সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ভোরের কাগজ সম্পাদক ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্তের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে ভালো বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউরোপসহ প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের যেমন রাষ্ট্রীয় একটা সম্পর্ক আছে, সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকার কারণে সুবিধা হয়েছে। যে কারণে ইলেকশন নিয়ে আমাদের কেউ কোনো কথা বলেনি। তারা নিজেরাই জানত- ইলেকশনে আমিই জিতে আসব। যারা আমাকে চায়নি, তাদের মাধ্যমেই কথা ওঠে, প্রশ্ন ওঠে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাশে বসা ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী ও শেখ ফজলুল করিম সেলিম; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সংবাদ সম্মেলনে শুরুতেই লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার নজরুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন।
পাকিস্তানের নির্বাচনের দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করতে ১২ থেকে ১৩ দিন সময় লাগলেও তাদের নির্বাচন ‘ফ্রি-ফেয়ার’। আর বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাত্র ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল এসে গেল, সেটি ফ্রি-ফেয়ার নয়! সুতরাং

এই রোগের কোনো ওষুধ আমাদের কাছে নেই। আমাদের শক্তি জনগণ, আমি সেটাই বিশ্বাস করি। তিনি বলেন, দেশটি এখন তো বোধ হয় একটা সমঝোতায় এসেছে, কে প্রেসিডেন্ট হবে, কে কী হবে। এ রকম যদি আমাদের দেশে হতো, তাহলে বোধ হয় সমালোচনাকারীরা খুশি হতো। তেমন হয়নি বলে অনেকের মন খারাপ। তবে মন খারাপ ভালো হয়ে যাবে।
মার্চে দুর্ভিক্ষ তৈরির চেষ্টা করবে বিএনপি-জামায়াত- নির্বাচনের আগে টুঙ্গিপাড়ার একটি সভায় এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সেই প্রশ্ন করা হলে জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ষড়যন্ত্র ছিল, ষড়যন্ত্র আছে। ষড়যন্ত্র বারবার হচ্ছে। তিনি বলেন, নির্বাচন যেন না হয়, সেজন্য বিরাট চক্রান্ত ছিল। ২৮ অক্টোবরের ঘটনা, তার আগের সময়ে অগ্নিসন্ত্রাস। এগুলো হঠাৎ করা নয়, পরিকল্পিত। যারা নির্বাচন বানচালের পক্ষে, তারা যখন নির্বাচন কিছুতেই আটকাতে পারবে না বলে মনে করল; তখন চক্রান্ত হলো জিনিসপত্রের দাম বাড়াবে। জনগণ তখন ক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন করে সরকার উৎখাত করবে। এই চক্রান্ত আছে।
একসময় ভাতের জন্য হাহাকার ছিল- এখন নেই। এমন মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, এখন কী সেই কথাটা বলে? বলে না। কী বলে? ডিমের দাম, পেঁয়াজের দাম, গরুর মাংসের দাম অথবা পাঙাশ মাছের পেটি খেতে পারছে না- এই তো! এটা কি একটা পরিবর্তন নয়? ১৫ বছরে এই পরিবর্তনটা তো এসেছে, সেটা তো স্বীকার করবেন। ১৫ বছর আগে কী ছিল? ভাতের জন্য হাহাকার ছিল। একটু নুন ভাত। ভাতের ফেন চাইত। এখন তো তা চায় না। মজুত করে রেখে পচিয়ে যারা বস্তায় বস্তায় পেঁয়াজ পানিতে ফেলে, তাদের গণধোলাই দেয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিম লুকিয়ে রেখে দাম বাড়ানো। আপনাদের কী মনে হয় না, পণ্যের দাম বাড়াতে সরকার উৎখাতে আন্দোলনকারীদের কিছু কারসাজি আছে? এর আগে পেঁয়াজের খুব অভাব। দেখা গেল বস্তার পর বস্তা পচা পেঁয়াজ পানিতে ফেলে দিচ্ছে। এই লোকগুলোকে কী করা উচিত? তাদের গণধোলাই দেয়া উচিত। জিনিস লুকিয়ে রেখে পচিয়ে ফেলে দেবে, আর দাম বাড়াবে। বৃহস্পতিবারের বৃষ্টির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই যে বৃষ্টি হলো। ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্য দেশ। মাঘের শেষে বৃষ্টি হলো, ফাল্গুনের শুরুতে বৃষ্টি হলো। খাদ্যপণ্য উৎপাদনে অসুবিধা হবে না।
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের অভাব আছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আমাদের প্রতিপক্ষ যারা আছে, তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের দল জামায়াতে ইসলাম। তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। জিয়াউর রহমান সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখল করে তাদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগ গণমানুষের কথা বলে গঠিত হয়েছিল। কিন্তু মিলিটারি ডিক্টেটরদের পকেট থেকে তৈরি হয়েছে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি। ক্ষমতার উচ্চ আসনে বসে যে দল তৈরি হয়, তাদের মাটি ও মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক থাকে না। তারা চায় কেউ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। সেটা করতে গিয়ে তারা ২০০৮ সালের নির্বাচনে ধরা খায়। এর পর থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে। রাজনীতি যদি জনগণের জন্য হয়, তবে জনগণের কল্যাণেই কাজ করতে হবে।
রমজানে নিত্যপণ্যের কোনোকিছুর সংকট হবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রমজানে কোনো কিছুর অভাব হবে না। ইতোমধ্যেই সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা নিয়ে অনেকে কথা বলবে। কিন্তু কোনো অসুবিধা হবে না। তিনি বলেন, রমজান তো কৃচ্ছ্রসাধনের জন্য। রমজানে মানুষ কম খায়। কিন্তু আমাদের সাইকোলজি হচ্ছে রমজান এলে যেন খাওয়া-দাওয়ার চাহিদাটা বেড়ে যায়। রমজানে যে জিনিসগুলো বেশি দরকার, যেমন- ছোলা, খেজুর, চিনি- এগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণে আনার ব্যবস্থা আছে। কাজেই এটা নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। এ ব্যবস্থা আমি করে রেখেছি অনেক আগে থেকেই।
ট্র্যাফিক জ্যাম নিয়ন্ত্রণে আইজিপিকে নির্দেশ দেয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হওয়াতে যানজট অনেকটা সহনশীল হয়েছে। সড়কে আগের মতো চাপ নেই। কিছু এলাকায় এখনো আছে। এক্সপ্রেসওয়ে পুরোটা হয়ে গেলে আরো কম আসবে। এছাড়া পুরো ঢাকায় আরো পাঁচটি মেট্রোরেল হবে। তাছাড়া সড়কে যেন গাড়িগুলো চলমান থাকে, সেজন্য ট্রাফিক লাইট পদ্ধতি সচল করতে বলেছি। গতকাল (বুধবার) আইজিপির সঙ্গে কথা বলেছি, এখন ট্রাফিক লাইট সচল করে দিয়ে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য। যেহেতু এখন আগের মতো অতিরিক্ত চাপ নেই। তাই লাইটের পদ্ধতিতে চলে গেলে সময়টা কম করে বারবার খুলে দিলে গাড়িগুলো যদি চলমান থাকে, তাহলে অনেকক্ষণ বসে আছে, সেই অনুভূতি হবে না। মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে নিয়ে সমালোচনাকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু কথা বলা বাঙালির চরিত্র। একটি দলই আছে, যাদের কিছু ভালো লাগে না। কিছু হলে তখন আবার উপভোগ করে।
বিশ্বমোড়লদের দুমুখো নীতির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, গাজা ও ফিলিস্তিনে যা হচ্ছে, তা অমানবিক কাজ। মানবতাবিরোধী কাজ। হাসপাতালগুলোর ওপর আক্রমণ। বাচ্চাদের কী দুরবস্থা। আমরা তো দেখছি, বিশ্বমোড়লেরা দুমুখো নীতিতে বিশ্বাস করে। প্যালেস্টাইনের সমস্ত জমি দখল করে ফেলছে, সেটা আগ্রাসন নয়, ইউক্রেনেরটা আগ্রাসন। তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। যুদ্ধকালীন যে কষ্ট, আমরা এর ভুক্তভোগী। আমি নিজেই তার ভুক্তভোগী। তিনি আরো বলেন, বিশ্বটা গেøাবাল ভিলেজ। একজনের ওপর আরেকজনের নির্ভরতা আছে। যুদ্ধ এক জায়গায় শুরু হলেও সেটা সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকছে না। এর প্রভাব পড়ছে সারা বিশ্বে। কষ্ট পাচ্ছে সারা বিশ্বের মানুষ। সবাই মূল্যস্ফীতির যন্ত্রণা পাচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকাসব দেশই ভোগ করছে যুদ্ধের যন্ত্রণা।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। মিয়ানমারের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াইনি। আলোচনা করে যাচ্ছি ধৈর্য ধরে। সবাইকে বলেছি, শান্ত মাথায় সবকিছু মোকাবিলা করতে হবে। আর এজন্যই দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে সুস্থ অবস্থায় আছি আমরা।
জিআই পণ্য হিসেবে টাঙ্গাইল শাড়ি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি টানা কিছুদিন টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি পরেছি। কারণ এটা বাংলাদেশের শাড়ি। এটা বুঝতে হবে- আমি এ দেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে আছি। এর পেটেন্ট রাইটসের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তবে সংবাদ সম্মেলনে পরে আসা শাড়িটি ফ্রেঞ্চ শিফন নয় জানিয়ে তিনি বলেন, এই শাড়িটি শফিপুর আনসার একাডেমি থেকে কেনা একটি তাঁতের শাড়ি। আমি আর নাম দিয়েছি শফিপুর শিফন। আনসার-ভিডিপি সদস্যরা এটি তৈরি করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই লিখিত বক্তব্যে মিউনিখ সফর ফলপ্রসু হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সফরের ফলে বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের শান্তি, সার্বভৌমত্ব ও সর্বাঙ্গীন নিরাপত্তার প্রতি অঙ্গীকার বলিষ্ঠরূপে প্রতিফলিত হয়েছে। দেশের আকার নয় বরং নীতির শক্তিতেই যে মানবতার রাজনৈতিক ও আর্থসামাজিক মুক্তি, এবারের সম্মেলনে আমি এই বার্তাই বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছি। পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় বৈঠকগুলোতে বন্ধুপ্রতিম দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ধারাবাহিকতা আরো দৃঢ় হয়েছে এবং সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়েছে। পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় সম্মেলনে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা সরাসরি শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সৌজন্যে - ভোরের কাগজ