“হাফেজ হওয়ার স্বপ্ন দেখতে গিয়ে চোখের দৃষ্টি হারালো ৭ বছরের শিশু
MD MAMUNUR RAHMAN, IT AFFAIRS SECRETARY, CENTRAL COMMITTEE, BANGLADESH
Date: 2024-06-23, created: 2024-06-23 02:04:59
ছেলেকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন নিয়ে, মাতা মোছাম্মৎ স্বপ্না আক্তার, ছেলে আয়াতুল ইসলামকে জানুয়ারী মাসের ২০২৪ ইং তে বাগে সিরিকূট তাহফিজুল কুরান আইডিয়াল মাদ্রাসায় ভর্তি করেন, যাহা বোয়ালখালী উপজেলার অন্তর্গত ৫নং সারোয়াতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডন্ত জুটপুকুর পাড়ে অবস্থিত। গত ২৬/০২/২০২৪ ইং তারিখে কুরআনের পারা কম পড়েছে বলে উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষিকা শাহীন আক্তার ছাত্র আয়াতুল ইসলামকে বেত্রাঘাত করতে থাকে। এক পর্যায়ে বেত তার চোখের ভিতর ডুকে গিয়ে তার চোখের মনিতে আঘাত হানে। শিক্ষিকা বুঝতে পেরে ছাত্র আয়াতকে সান্তনা ও ভয় দেখিয়ে তার মাকে কোন কিছু বলতে নিষেধ করে। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ মহিউদ্দীন মানিকসহ ছাত্রকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রাথমিক চিকিৎসার নামে আয়াতকে ঔষধের দোকান থেকে একটি চোখের ড্রপ নিয়ে দিয়ে তাকে মাদ্রাসায় রেখে দেয়। ২৮/০৫/ ২০২৪ ইং তারিখে আয়াতের মা ছেলের খাবার দিতে মাদ্রাসায় আসলে, তিনি ছেলের চোখ লাল দেখতে পেয়ে জিজ্ঞেস করলে অধ্যক্ষ মহিউদ্দীন মানিক বলেন আয়াতের চোখে গরম পরেছে, এইটা কয়েক দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যাবে এবং মাদ্রাসার আরো কয়েকজন ছাত্রের এইরকম হয়েছে, এই বলে অধ্যক্ষ ততক্ষনাৎ আয়াতকে মাদ্রাসার রুমে পাঠিয়ে দেন। ঐ দিন বিকাল থেকে আয়াতের চোখে প্রচন্ড যন্ত্রণা অনুভব হয় এবং তার শরীরে জ্বর চলে আসলে ২৯/০৫/২০২৪ ইং তারিখে ভোর ৫:১৪ মিনিটে রিক্সা নিয়ে আয়াতের বাড়ির সামনে মাকে ডেকে বলে আপনার ছেলে রাতে চোখে পানি দিয়ে চোখ লাল করে ফেলেছে। আয়াতের বাবা-মা ততক্ষনাৎ ছেলেকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আয়াতের চোখ দেখে বলেন তাকে দ্রুত পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নিয়ে যেতে। আয়াতকে ঐখানে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তাকে বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা দিলে, সেগুলোর রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলেন আয়াতের চোখে আনুমানিক ২/৩ দিন আগে আঘাত হয়েছে। পরে ডাক্তার আয়াতের চোখে একটি অপোরেশন করান। অপারেশনের পরে তিনি আয়াতের বাবা-মাকে বলেন আয়াতের চোখে আঘাত গুরুতর হওয়ায় এবং চিকিৎসা করাতে দেরি হওয়ায় আয়াত তার বাম চোখের দৃষ্টি শক্তি ফিরে পাবে না, কিন্তু তাকে যদি উন্নত চিকিৎসা দেওয়া যায় তাহলে হয়তো সে আবার পুনরায় দৃষ্টি শক্তি ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আয়াতুল ইসলাম পোপাদিয়া, ওয়ার্ড: ৭, খরনদ্বীপ, বোয়ালখালী, এর বাসিন্দা মোঃ সাজ্জাদ হোসেন ও স্বপ্না আক্তার দম্পতির সন্তান।
দুঃখের বিষয় এই যে আয়াতের বাবা একজন নিম্ন আয়ের ব্যক্তি, তার পক্ষে ছেলের উন্নত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। পরিবারের দাবী- যেহেতু মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও গাফেলতির কারনে শিশু আয়াতের আজকে এই অবস্থা সেহেতু এর দায় অবশ্যই তাদেরকেই নিতে হবে । এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ঠ মহলের সহযোগীতা কামনা করছি যেন ভবিষ্যতে আর কোন মায়ের ছেলে এইভাবে দুর্ঘটনার শিকার না হয় ।
এ বিষয়ে আইনগত সহযোগিতার জন্য আয়াতুল ইসলাম এর পিতা-মাতা “ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টাস ফাউন্ডেশন”, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটির নিকট লিখিতভাবে আবেদন করেন। যার প্রেক্ষিতে সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত করে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা প্রদনা করা হয়েছে। প্রয়োজনে কেন্দ্র থেকে আইনি সহযোগিতা করা হবে।
এ ঘটনায় মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হয়েছে বিধায় “ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ক্রাইম রিপোর্টাস ফাউন্ডেশন” শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছে। অমানবিক নির্যাতনের সাথে একটি সুন্দর নিষ্পাপ শিশুর জীবন দৃষ্টিহীন বেদনাময় হয়ে ওঠার পিছনে দায়ীদের আইনের আওতায় এনে আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ঠ সকলের সহযোগীতা কামনা করে। পরমকরুনাময়ের নিকট আয়াতের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য দোয়ার আবেদন রইল।
রিপোর্ট করেছেন:
১। মোঃ তৌহিদুল ইসলাম (তৌফিক), যুগ্ম সাধারন সম্পাদক,
২। মোঃ জসিমউদ্দীন হায়দার চৌধুরী, ভিক্টিম সাপোর্ট অফিসার,
৩। মোঃ নেজাম উদ্দীন, সদস্য,
ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটচ ক্রাইম রিপোর্টাস ফাউন্ডেশন, চট্টগ্রাম